
কৈলাসহর, ত্রিপুরা। ১২ জুলাই ২০২৫ঃ ত্রিপুরার রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কংগ্রেস। শনিবার কৈলাসহরে এক জনসভায় বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন ত্রিপুরা বিধানসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা ও প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা। তাঁর অভিযোগ, বর্তমানে ত্রিপুরার রাজনীতিতে দুর্নীতি চরমে উঠেছে। ঠিকাদারদের কাজ পাওয়ার জন্য মন্ত্রীদের ‘ঘুষ’ দিতে হয়— এমনই বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি।
সরাসরি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বীরজিৎ সিনহা বলেন,
“আজকের ত্রিপুরায় আপনি যদি কোনো কন্ট্রাক্টের কাজ পেতে চান, তবে আপনাকে মন্ত্রীকে টাকা দিতে হবে। নচেৎ কন্ট্রাক্ট পাবেন না। রাজনীতির নামে চলছে লুটপাটের রাজনীতি।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বিজেপি সরকারের স্বচ্ছতার দাবিকেও কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন।
সভা থেকে বীরজিৎ সিনহা আরও বলেন,
“আজকে যারা বিজেপিতে আছে, কাল তারা কংগ্রেসেও চলে আসতে পারে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কেউ স্থায়ী শত্রু নয়, কেউ স্থায়ী বন্ধু নয়। আদর্শ ও সময় অনুযায়ী রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন হতেই পারে।”
তিনি দাবি করেন, ত্রিপুরার জনগণ এখন মোহভঙ্গের পথে। ২০১৮ সালে ‘পরিবর্তনের’ স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি, কিন্তু বাস্তবে মানুষ দেখেছে চাকরি নেই, উন্নয়ন নেই, কেবল একচেটিয়া রাজনৈতিক দখলদারি ও দুর্নীতির সংস্কৃতি।
বীরজিৎ সিনহার এই মন্তব্য শুধু সমর্থকদের মধ্যেই নয়, রাজ্য রাজনীতিতেও নতুন করে আলোড়ন তুলেছে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে— যদি সত্যিই মন্ত্রীদের কাছে কন্ট্রাক্টের জন্য টাকা দিতে হয়, তবে সেই দুর্নীতির তদন্ত হবে কি না, নাকি তা রাজনৈতিক বক্তব্য বলেই এড়িয়ে যাবে শাসক দল?
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব, যুব কংগ্রেস কর্মী এবং সাধারণ মানুষ। বক্তৃতা শেষে বীরজিৎ সিনহা জনগণকে আহ্বান জানান, “তৃণমূল স্তর থেকে পরিবর্তন আনতে হবে, আর তার জন্য প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত গণতন্ত্রে আস্থা রাখা।”
সভার মঞ্চ থেকে স্পষ্ট বার্তা দিল কংগ্রেস— আগামিদিনে ত্রিপুরার রাজনৈতিক মেরুকরণে তারাও অন্যতম শক্তি হয়ে উঠতে চায়, এবং জনসংযোগের এই প্রচেষ্টা তারই অঙ্গ।