
রাজনগরের স্নেহময়ী নারী গীতা দাস বৃন্দাবনে ভিড়ের মাঝে হারিয়ে গিয়ে এখনও অদৃশ্য; নিখোঁজ ডায়েরি করেও ফল মেলেনি, শোকে আচ্ছন্ন গ্রামবাসী।
তেলিয়ামুড়া থানাধীন রাজনগর এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। সংসারের স্তম্ভ ভেঙে পড়েছে মাতৃহারা বেদনায়। ৫০ উর্ধ্বা গীতা দাস, যিনি কয়েকদিন আগে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভারতবর্ষের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে তীর্থভ্রমণে বেরিয়েছিলেন, আজও নিখোঁজ। শেষ গন্তব্য বৃন্দাবনে ভিড়ের মাঝে হঠাৎ হারিয়ে যান তিনি। সেই থেকে একমাত্র ছেলে কৃষাণ দাস ও পরিবারের সদস্যরা নিদ্রাহীন রাত আর অশ্রুসিক্ত দিন পার করছেন।
কৃষাণ দাসের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আর্জি জানিয়েছেন— “মুখ্যমন্ত্রী যেন আমার মাকে ফিরিয়ে দেন। মা-ই আমার পৃথিবী। তাঁর অনুপস্থিতিতে আমি নিঃস্ব।”
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কৃষাণ দাস জানান, কয়েকদিন আগে তিনি মা গীতা দাস ও তার ছোট সন্তানকে নিয়ে পবিত্র ভ্রমণে বের হন। বৃন্দাবনে পৌঁছে ঘটে যায় সর্বনাশ। ভিড়ের মধ্যে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান তার মা। এরপর বৃন্দাবনের স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে তিনি একা হাতে প্রতিটি অলিগলি, প্রতিটি মন্দিরে খুঁজে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কোনো হদিস পাননি। আশা ভেঙে গেলেও খোঁজ বন্ধ করতে পারেননি তিনি। অবশেষে হতাশ হয়ে তিনি সংবাদমাধ্যম ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হন।
কৃষাণ দাসের আর্তি— “আমার মা-ই আমার ভরসা। আমরা তিনজনের সংসার করি। মা হারিয়ে আমি নিঃস্ব। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, যেন সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে আমার মাকে খুঁজে দেয়। মায়ের ফিরে আসাই আমার একমাত্র স্বপ্ন।”
এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা রাজনগর জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। প্রতিবেশীরাও বলছেন, গীতা দাস ছিলেন স্নেহময়ী, পরোপকারী ও সমাজসেবামুখী মানুষ। তার হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শুধু একটি পরিবারের নয়, সমগ্র সমাজের বেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।