
তেলিয়ামুড়া, ত্রিপুরা । ১৭ জুলাই । রিপোর্ট; হিরনময় রায়ঃ “গণতন্ত্র মানে কেবলমাত্র একটি শাসন ব্যবস্থা নয়, বরং এটি এমন একটি কাঠামো যেখানে জনগণের অধিকার, মতামত, স্বাধীনতা ও সাম্যতা সম্মানের সাথে প্রতিফলিত হয়। একমাত্র গণতন্ত্রই পারে জনগণের ক্ষমতায়নকে বাস্তব রূপ দিতে এবং ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে একটি স্থিতিশীল, প্রগতিশীল সমাজ।” — এই মহান আদর্শকে সম্মান জানিয়ে এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে মজবুত করে তোলার লক্ষ্যে আবারও এগিয়ে এলো খোয়াই জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও সুনামধন্য ক্লাব ‘প্রোগ্রেসিভ ইয়ুথ ক্লাব’।
আগামী ১০ই আগস্ট ২০২৫, রোববার, সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ক্লাবের কার্যকরী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এক সাধারণ নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্লাবের সমস্ত সদস্য তাঁদের গোপন ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন, যারা আগামী তিন বছর ধরে ক্লাব পরিচালনার গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই নির্বাচন পরিচালিত হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে।
উল্লেখ্য, ক্লাবের পক্ষ থেকে এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন নিয়োজিত রিটার্নিং অফিসার শ্রদ্ধেয় শ্রীযুক্ত নেপাল চন্দ্র দেব এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার শ্রীযুক্ত সজল ভট্টাচার্য্য। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা জানান, নির্বাচন পরিচালনার যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে এবং ক্লাবের নিজস্ব সংবিধান মেনেই গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে।
রিটার্নিং অফিসারদ্বয় জানান, এবারের নির্বাচনে কোনও প্রকার অর্থবল, পেশিশক্তি বা কূটকৌশলের জায়গা থাকবে না। ভোটার তথা ক্লাব সদস্যদের স্বাধীন মতামত এবং বিচারের ওপর ভিত্তি করেই গঠিত হবে আগামী দিনের নেতৃত্ব। এই নির্বাচন হবে একেবারে মডেল গণতান্ত্রিক চর্চার আদর্শ নিদর্শন।
প্রসঙ্গত, প্রোগ্রেসিভ ইয়ুথ ক্লাব দীর্ঘদিন ধরে খোয়াই জেলার অন্যতম সামাজিক সংগঠন হিসেবে এলাকার যুবসমাজ ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে একাধিক সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্প এবং সাংস্কৃতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। বিগত তিন বছর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমেও গঠিত হয়েছিল বর্তমান কার্যকরী কমিটি। এখন ক্লাবের নিজস্ব গঠনতন্ত্র প্রণীত হওয়ায়, ভবিষ্যতেও ঠিক এইভাবেই স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল নেতৃত্ব নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হয়েছে।
রিটার্নিং অফিসারগণ আরও জানান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে মর্যাদা দিয়েই ক্লাব নির্বাচন পরিচালিত হবে এবং ক্লাবের প্রতিটি সদস্য যেন নির্ভয়ে ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁরা বলেন, প্রোগ্রেসিভ ইয়ুথ ক্লাবের এই দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ সমাজে গণতন্ত্রের চর্চাকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে এবং অন্য ক্লাব ও সংগঠনের জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।
সামাজিক দায়িত্ব ও নৈতিক নেতৃত্ব গঠনের এই প্রয়াসে, প্রোগ্রেসিভ ইয়ুথ ক্লাব যে ভাবে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সদস্যদের সম্পৃক্ত করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সমাজের সচেতন মহলের মতে, আজকের দিনে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার এমন উদ্যোগ যুবসমাজের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও নেতৃত্বের সংস্কৃতি গঠনে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।