
তেলিয়ামুড়া প্রতিনিধি: বর্তমান সরকার শহর থেকে গ্রাম, পাহাড় থেকে সমতল সর্বত্রই যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে—এমনটাই দাবি করা হচ্ছে শাসক মহলের তরফে। লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্যের নানা প্রান্তে গড়ে তোলা হচ্ছে রাস্তা, ব্রিজ সহ নানা অবকাঠামো। তবে বাস্তব চিত্র যে কতটা ভিন্ন, তার জ্বলন্ত উদাহরণ দেখা গেল তেলিয়ামুড়া আরডি ব্লকের অন্তর্গত করবং পাড়া থেকে তুইসিনদ্রাই রোডের উপর নির্মিত একটি ব্রিজে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বহু দিনের দাবি ও দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়—ব্রিজের এপ্রোচ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে এতটাই অবৈজ্ঞানিক ও খারাপভাবে, যে নির্মাণের মাত্র এক বছরের মধ্যেই রাস্তাটি প্রায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভারী বর্ষা কিংবা নিয়মিত যান চলাচলে রাস্তাটি ভেঙে গিয়ে সাধারণ মানুষকে পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুরো কাজেই ছিল চরম অনিয়ম। শুধু তাই নয়, স্থানীয়রা সরাসরি অভিযোগ করছেন যে এই নির্মাণকাজের পিছনে আর্থিক দুর্নীতি রয়েছে, এবং একাংশ কর্মচারী এই প্রকল্প থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
গোটা বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তেলিয়ামুড়ার আর ডি দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রজিৎ ভৌমিক দাবি করেছেন, “বিষয়টির পেছনে মূল সমস্যা হল জমি সংক্রান্ত জটিলতা। তবে খুব শীঘ্রই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তবে প্রশ্ন উঠছে—জমি জটিলতা আগেই থাকলে, তা নিরসন না করেই কেন শুরু করা হল ব্রিজ নির্মাণের কাজ? সরকারি কোষাগারের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি ব্রিজ যদি ব্যবহারযোগ্যই না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান না হয়ে উল্টে তাদের দুর্ভোগই বা কেন বাড়ছে?
এই ঘটনার পর আবারও সামনে চলে এসেছে সরকারি প্রকল্পে নজরদারির অভাব, পরিকল্পনার ত্রুটি এবং একাংশ কর্মকর্তার দায়িত্বজ্ঞানহীন ভূমিকা। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, উন্নয়নের নামে এমন অপচয় বন্ধ না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাঁরাই—যাদের জন্য প্রকল্প, সেই জনগণ।